দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস পর খুললো দেশের বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার। আজ সোমবার (১৭ আগস্ট) প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেই সীমিত আকারে কক্সবাজারের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়া হয়েছে।
শুধু কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন শিল্প সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির জুম কনফারেন্স সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের আলোকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়ার জন্য এই ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও ইতিমধ্যে অনেক হোটেল-মোটেলে পর্যটকরা বেড়াতে আসার জন্য রুম বুকিং দিতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন : চলনবিলে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়
আজ থেকে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প সীমিত আকারে খুলে দেওয়ায় কক্সবাজারের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্ট, খুদে ব্যবসায়ী, কিটকট ব্যবসায়ী, ভাসমান ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই পর্যটকদের বরণ করতে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
সবার হাঁকডাকে সরব হয়ে উঠেছে বিচ, হোটেল-মোটেল জোন এলাকা। ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। নিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধির আলোকে বিভিন্ন ব্যবস্থা। ফিরে এসেছে, কক্সবাজারের কোলাহলময় ঐতিহ্যবাহী পর্যটন শিল্পের আসল রূপ।
এদিকে কক্সবাজার জেলা ট্যুরিস্ট পুলিশও পর্যটক এবং পর্যটক শিল্পের সার্বিক নিরাপত্তায় বেশ প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানা গেছে। কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি, রেসকিউ টিমগুলোসহ সংশ্লিষ্ট সবাই তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নিশ্চিত করেছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেছেন, কক্সবাজার জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রায় দুই লাখ লোক জড়িত। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আলোকে তাদের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে সীমিত আকারে পর্যটন শিল্প আজ সোমবার (১৭ আগস্ট) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে।
তবে স্বাস্থবিধি কঠোরভাবে পালন করে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন শিল্প খুলতে হবে। মেনে চলতে হবে এ বিষয়ে প্রণীত কর্মপন্থার সব নিয়ম-কানুন ও শর্ত। মানতে হবে জাতীয় গাইডলাইন।
জানা গেছে, এখন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যেতে পারবেন পর্যটকরা। থাকতে পারবেন হোটেল ও মোটেলেও।
পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার জন্য সকল ব্যবসায়ীদের ৬৫ দফা দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ সেই নির্দেশনা অমান্য করে তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন জানায়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পর্যটকদের প্রতিও কঠোর দৃষ্টি থাকবে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে দীর্ঘ সময় পর কক্সবাজারে পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়ায় সকলের মধ্যে উচ্ছ্বাস কাজ করছে। কক্সবাজারের সব জায়গায় কর্ম চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
কক্সবাজার হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম বলেন, দীর্ঘদিন ব্যবসা বন্ধ থাকায় বিপুল পরিমাণ লোকসান গুণতে হয়েছে। বিধি নিষেধ দিয়ে হলেও খুলে দেওয়ায় আমরা আনন্দিত। আমরা সরকারের সব দিক নির্দেশনা মেনে চলবো।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ২৬ মার্চ থেকে দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্রের মতো সবচেয়ে বড় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ পাঁচ মাস পরে কঠোর বিধি নিষেধ দিয়ে খুলে দেওয়া হলো।