বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

ওয়েব সিরিজের নামে এসব কী হচ্ছে

বিনোদন প্রতিবেদক
আপডেট : বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০২০
ওয়েব সিরিজের একটি দৃশ্য ছবি : সংগৃহীত

ওয়েব সিরিজের নামে সেন্সরবিহীন দেশীয় সিরিজের বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগ উঠেছে। সেন্সর না থাকায় এসব ওয়েব সিরিজে উদ্ভট গল্প, অশালীন দৃশ্য, নোংরা সংলাপ ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিশেষ করে টেলিভিশনের শিল্পীদের এমন অশালীন কাণ্ডে বিব্রত এবং বিস্মিত বাংলা নাটকের দর্শক ও নির্মাতারা।

সমালোচকদের মতে, গল্পের প্রয়োজনে গালি ব্যবহার করা হলেও টিভি নাটকের সেই অংশের শব্দটুকু সাধারণত মুছে দেওয়া হয়। মাদকদ্রব্য ব্যবহার ও সেবন করার দৃশ্যে ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ লেখা থাকে। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজে এ ধরনের সচেতনতা লক্ষ্য করা যায়নি।

 

সুমন আনোয়ার পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘সদরঘাটের টাইগার’। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন ছোটপর্দার অভিনেতা শ্যামল মাওলা। তার বিপরীতে লাইলী চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারহানা হামিদ। গল্পে দেখা যায়, সদরঘাটের শ্রমিক টাইগার। সে লাইলীকে ভালোবাসে। লাইলী পতিতা। তাদের মধ্যে প্রেম হয়। এরপর ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে।

এই ওয়েব সিরিজের অধিকাংশ সংলাপে একাধিকবার অশালীন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু শব্দগুলো মুছে দেওয়া হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ প্রসঙ্গে শ্যামল মাওলা বলেন, এই ওয়েব সিরিজের রেসপন্স বেশ ভালো! বাংলাদেশে এই বাজেটের এই লেভেলের ওয়েব সিরিজ করা সাহসের ব্যপার!

কিন্তু সমালোচনাও তো কম হচ্ছে না। স্মরণ করিয়ে দিলে এই অভিনেতা বিস্মিত কণ্ঠে বলেন, সমালোচনা তো থাকবেই! নতুন কিছু যখন হয় তখন কেউ খুশি হবেন, কেউ অখুশি হবেন- এটাই তো স্বাভাবিক। বিষয়টি পরিচালকের ব্যাপার। আমার ভূমিকা হচ্ছে অভিনয় করা। আশা করছি আপনারাও এপ্রিসিয়েট করবেন। দুনিয়া যেভাবে চলছে আমরাও সেভাবে চলছি!

গত ২৭ মে অনলাইনে মুক্তি পেয়েছে শিহাব শাহীনের ক্রাইম থ্রিলার ‘আগস্ট-১৪’। তুশি নামের বখে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ের গল্প নিয়ে এই ওয়েব সিরিজের কাহিনী।

২০১৩ সালে ঐশী মা বাবাকে নির্মমভাবে খুন করে পত্রিকার শিরোনাম হয়েছিল। বোঝা যায়, সেই ঐশীর ভূমিকায় এখানে তুশিকে দেখানো হচ্ছে। তুশি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাসনুভা তিশা। এই সিরিজে তুশির বন্ধুদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক, বাসায় একা নীল সিনেমা দেখার মুহূর্তসহ নানা কুরুচিপূর্ণ দৃশ্য রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তাসনুভা তিশা বলেন, ওখানে গল্পের বাইরে কিছু ছিল না। ভাষার ব্যবহার তো চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য করতে হয়েছে। এখন এ নিয়ে কেউ যদি নেগেটিভ কিছু বলেন, এমনিতেও তিনি বলবেন। এগুলো নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।

আদনান ফারুক হিল্লোল ও নাজিয়া হক অর্ষা অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘বুমেরাং’ মুক্তি পেয়েছে গত ঈদে। এই ওয়েব সিরিজে নিবিড় শয্যাদৃশ্য রয়েছে। এ প্রসঙ্গে টিভি প্রযোজক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজু মনতাসির বলেন, আমরা শুনেছি, নিয়মনীতির বাইরে গিয়ে অনেকে সুড়সুড়ি জাগানো কাজ করছেন। এসব ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই।

চলচ্চিত্রে নোংরা সংলাপ, অশ্লীল পোশাক, নকল গল্পের উপর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের বিধি-নিষেধ রয়েছে। কিন্তু নাটক বা ওয়েব সিরিজের কোনো সেন্সর নেই। তারই সুযোগ নিচ্ছেন কেউ কেউ। সরকার যেখানে পর্নোগ্রাফি বন্ধে তৎপর, সেখানে ওয়েব সিরিজের নামে এই অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে।

বিশেষ করে যারা টেলিভিশনে নিজস্ব সংস্কৃতি বজায় রেখে অভিনয় করছেন, তাদেরকেই ওয়েব সিরিজে অশালীন দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখে বিস্মিত হচ্ছেন অনেকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া