রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, এবারের নির্বাচনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে হারানো নির্বাচনী ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। নির্বাচন কমিশন এ সুযোগ হারাতে চায় না।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মো. সানাউল্লাহ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদসহ স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন হবে স্বচ্ছ। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিয়ে সকল সংশয় দূর করা হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন, পুলিশসহ সরকারের সব প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের কারণে। আমরা সবাই উপলব্ধি করি আমাদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হবে।সেটার একমাত্র উপায় হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন। এবং আমি নিশ্চিত সবাই এটা করতে বদ্ধপরিকর।
মো. সানাউল্লাহ বলেন, এবারের নির্বাচনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে হারানো নির্বাচনি ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। নির্বাচন কমিশন এ সুযোগ হারাতে চায় না।
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, বিগত সময়ে প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসাররা ঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি। তবে এবার নিরপেক্ষ মানুষদের দায়িত্ব দেওয়া হবে এবং ক্ষমতায়ন করা হবে। একইসঙ্গে সমভাবে ভোট আয়োজনের জন্য সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের জন্য ৩ লাখ ৮৮ হাজার আবেদন পেন্ডিং আছে উল্লেখ করে নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও এনআইডিতে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে সতর্কভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন ইসি সানাউল্লাহ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ বিষয়ে স্পষ্ট করে বলেছেন। তফসিল ঘোষণার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সার্বিক রাজনীতি এবং বিচারিক প্রক্রিয়া কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সে সময় যারা তফসিলভুক্ত এবং নিবন্ধিত থাকবে তাদের নিয়ে ভোট অনুষ্ঠান হবে। আগে থেকে কিছু বলা যাবে না কারণ এটি একটি বিচারিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সিদ্ধান্তের বিষয় এছাড়া ঐক্যমতেরও বিষয় আছে।
মতবিনিময় শেষে নগরীর লাইন্স স্কুলে নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ।
মো. সানাউল্লাহ বলেন, আগামীতে একটা সুষ্ঠু, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য ও প্রশ্নহীন নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের প্রত্যাশা। এই ধরনের নির্বাচনের প্রথম শর্তই হচ্ছে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠ ভোটার তালিকা। বিগত নির্বাচনগুলোর থেকে আসন্ন নির্বাচনে সাংবাদিকরা সর্ব্বোচ্চ প্রবেশাধিকার পাবেন। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। নির্বাচন কাজে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে সাংবাদিকরা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবেন আমরা এমনটা ভেবেছি। আমাদের জনপ্রশাসনের সংস্কারের এমন প্রস্তাবও এসেছে।
তিনি বলেন, ভোট যখনই হোক আমাদের একটা ভোটার তালিকা প্রযোজন হবে। এই ভোটার তালিকা নিয়ে কিছু অভিযোগ আছে সেগুলো নিরসন করতে হবে। আমাদের কমিশন সভার সিদ্ধান্ত মতে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হবে। নির্দিষ্ট সময়ে খসড়া তৈরি পর ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা হয়ে যাবে। ভোটার তালিকা নিয়ে অভিযোগ কাটিয়ে ওঠার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ করা হবে। ভুয়া ভোটার তালিকা, মৃত ভোটারদের উপস্থিতি, বিদেশি নাগরিকদের উপস্থিতি, দ্বৈত ভোটারদের উপস্থিতি- এগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্যই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্বাচন কমিশনের হাতে নয়। তবে প্রধান উপদেষ্টা যেমনটা বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে যেকোনো সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এই টাইম ফ্রেমকে ধরে নির্বাচন আয়োজন করা।
মতবিনিময় সভায় রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল ও রংপুর পুলিশ সুপার মো. আবু সাইম।