নিজস্ব প্রতিবেদক :
গত এক বছরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এক হাজার ৯৯৬ কোটি ৯৯ লাখ ৭২৯ টাকার অবৈধ চোরাচালান পণ্য এবং মাদকদ্রব্য আটক করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাচালান প্রতিরোধে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও দিক নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবির সার্বক্ষণিক টহল কার্যক্রম পরিচালনা, ব্যাপক তল্লাশি এবং নজরদারি বৃদ্ধির ফলে প্রায়ই বিজিবিসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বিপুল পরিমাণ চোরাচালান পণ্য ও মাদকদ্রব্য আটক করা হচ্ছে। বিজিবির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ১৯৯৬ কোটি ৯৯ লাখ ৭২৯ টাকার অন্যান্য অবৈধ চোরাচালান পণ্য এবং বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য আটক হয়েছে।
তিনি বলেন, পাশাপাশি অন্যান্য অবৈধ চোরাচালান পণ্য এবং মাদকদ্রব্য আটকের সময় গত জানুয়ারি ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ২,৮১৭ জন আসামির বিরুদ্ধে ৩৮ হাজার ৬৯২টি মামলা রুজু করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গত জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত জব্দ করা উল্লেখযোগ্য কিছু চোরাচালান পণ্য এবং মাদকদ্রব্য হলো- ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ, বিয়ার, গাঁজা, হেরোইন, কোকেন, আফিম, ক্রিস্টাল মেথ আইস, এলএসডি, সিরাপ, বিভিন্ন নেশা জাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন ইত্যাদি।
অন্যান্য চোরাচালান পণ্য, বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র ও গোলাবারুদ, স্বর্ণ, রৌপ্য, বিভিন্ন ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা, গবাদিপশু, কাঠ, কষ্টি পাথর, বিভিন্ন প্রকার তৈরি পোশাক ও কাপড়, চা-পাতা, বিভিন্ন ধরনের ফল, নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোজ্যপণ্য, যানবাহন, ইমিটেশন, প্রসাধনী সামগ্রী, আতশবাজি ইত্যাদি।
ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বিভিন্ন মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জরিমানার মাধ্যমে ৭৭৫ কোটি ৮৭ লাখ ২৪ হাজার ৮০৭ টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা করেছে।
তার আরেক এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আধুনিক অগ্নিনির্বাপক গাড়ি পাম্প ও উদ্ধার সরঞ্জামাদি সংগ্রহের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সারাদেশে বিদ্যমান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনসমূহকে আধুনিক সরঞ্জামে সুসজ্জিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনসমূহে আধুনিক ও যুগোপযোগী গাড়ি পাম্প ও উদ্ধার সরঞ্জামাদি সংগ্রহের লক্ষ্যে “মর্ডানাইজেশন অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স” ও “ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এর অধীনে ১৩টি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ৭৩টি বিশেষায়িত অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার ইউনিট মোতায়েন” শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্প দুইটি অনুমোদিত হলে দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হবে।
কুমিল্লা-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পুলিশের বিভিন্ন স্থানে জরাজীর্ণ থানাগুলোকে আধুনিক এবং প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক ও আবাসিক সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের থানায় প্রশাসনিক কাম ব্যারাক ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে।