শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

উত্তরবঙ্গে পেট্রলপাম্পে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার

বগুড়া জেলা প্রতিনিধি
আপডেট : বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
উত্তরবঙ্গে পেট্রলপাম্পে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার

বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : 

সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গের সব পেট্রোল পাম্প বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাপেওএ) রাজশাহী বিভাগ।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজার সঙ্গে বৈঠক শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাপেওএ-এর রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল জলিল। এসময় বগুড়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটার্স, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনও আলোচনা ছাড়াই মঙ্গল ও বুধবার বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার হামিম ফিলিং স্টেশন, আজিজা ফিলিং স্টেশন এবং আশা ফিলিং স্টেশনের সামনে প্রাচীর দিয়ে যানবাহন প্রবেশে বাধা দেয়। এ ছাড়া পাম্পের জমি উচ্ছেদ করা হয়।

তিনি জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ধারিত সব নিয়ম মেনে ও বৈধ লাইসেন্স অনুসরণ করে ব্যবসা করে আসছেন। নিয়মিত রাজস্ব প্রদান করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। অতীতে কখনও এমন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়নি। এতে জ্বালানি তেল পরিবেশকদের মাঝে উদ্বেগ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া এ অভিযানে জ্বালানি খাতকে অস্থিতিশীল ও ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্র করা হয়। এ কারণে বাধ্য হয়েই তারা উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের চার শতাধিক পাম্পে বুধবার সকাল ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জ্বালানি তেল উত্তোলন, বিপণন ও পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছিল।

এ অচলাবস্থা নিরসনে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বুধবার দুপুরে তার কার্যালয়ে জরুরি সভা আহ্বান করেন। সেখানে বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা, বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার, পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জেলা প্রশাসন দুঃখ প্রকাশ করে উচ্ছেদ অভিযান আর না চালানোর ঘোষণা দেয়। ফলে বুধবার বিকাল ৪টা থেকে দুই বিভাগের সব পাম্পে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা পাম্পগুলো যদি নিজস্ব জমিতে স্থাপন করা হয়ে থাকে, তাহলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে। এ বিষয়ে কমিটি হয়েছে, মাপা হবে। আর যদি পাম্পগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে হয়ে থাকে তাহলে তারা নিজেরা সরে যাবে। এসব নিয়ে সমঝোতা হওয়ায় বুধবার বিকাল ৪টা থেকে দুই বিভাগের পাম্পগুলোতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে পাম্পগুলোতে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ধর্মঘট ডাকার ফলে জ্বালানি তেল বিক্রি, উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ থাকে। এতে বিভিন্ন যানবাহন পাম্পে এলেও তাদের তেল দেওয়া হয়নি। ফলে দীর্ঘ আট ঘণ্টা অনেক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

এতে জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বগুড়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর বিকাল ৪টায় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ায় জনগণের মাঝে স্বস্তি দেখা দেয়।

বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা সঠিক সীমানা নির্ণয় করে অপসারণ করছি। যেগুলো জায়গা অপসারণ করা হচ্ছে সব সওজের জায়গা। দীর্ঘদিন দখলে ছিল এটা মুক্ত করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিনা নোটিশে ও কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি ছাড়া সওজ বিভাগ আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। এতে পেট্রোল পাম্প মালিকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পেট্রোল পাম্প মালিকদের এই ধর্মঘট সফল করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছিল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া