নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের একেক সময় একেক বক্তব্যই তাদের চরিত্রকে প্রকাশ করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৭ জুন) দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের সম্পদ লুটপাটের পাকাপোক্ত বন্দোবস্ত করা হয়েছে এবারের বাজেটে। বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট দেশের প্রধান জাতীয় সঙ্কটে পরিণত হয়েছে। এই সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধ নিরবাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে দরিদ্র জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ বাজেট গণবিরোধী। গোষ্ঠীস্বার্থে এ বাজেট দেয়া হয়েছে। বাজেট ঘাটতি দেশের অর্থনীতিকে আরও সংকটে ফেলে দেবে।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও দেশে কমানো হয়নি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ। এ চাপ মোকাবিলায় বাজেটে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও নিত্যপণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার না থাকলে সরকারের জবাবদিহিতা থাকে না। এতে দেশের অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না।
তিনি বলেন, এ সংকট থেকে মুক্তি পেতে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা অবশ্যই দরকার। এটা সম্ভব নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন দেয়া।
‘নজিরবিহীন লুটপাট ও অলীক কল্পনার অবাস্তবায়নযোগ্য গণবিরোধী বাজেট’ শীর্ষক শিরোনামে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাজেটে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থপাচার প্রতিরোধে কোনও দিকনির্দেশনা নেই। ক্ষমতার বলয়ের বাইরে সাধারণ মানুষের অনুকূলে এ বাজেট কোনও ভূমিকা রাখবে না। এ বাজেট গণবিরোধী বাজেট। গত এক দশকে গোষ্ঠীস্বার্থে পলিসি ইস্যুজ, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, রাজস্ব সেক্টর বা আর্থিক খাতসহ অন্যান্য জরুরি খাতে কাঠামোগত বড় কোনও সংস্কার করা হয়নি। এই বাজেটেও এসব সংস্কারের কোনও ইঙ্গিত নেই।
তিনি উল্লেখ করেন, স্মার্ট বাংলাদেশে এবার তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) স্মার্ট লুটপাটের বাজেট দিয়েছে। তারা চুরিতে স্মার্ট। ভোট চুরি, ব্যাংক চুরি, অর্থপাচার এসব কিছুতেই। স্মার্টলি লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি করার, ব্যাংক লুটপাট, সিন্ডিকেট পরিচালনা, জনগণের সম্পদ লুটের পাকা বন্দোবস্ত করা হয়েছে এ বাজেটে। এদের লুটপাটের অংশীদার বানানো হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার গত ১ জুন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে তা বর্তমান ফ্যাসিস্ট লুটেরা সরকারের অর্থনৈতিক দুর্নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষার এক বার্ষিক ঘোষণাপত্র মাত্র। এই বাজেট কল্পনাবিলাসী বাস্তবায়ন অযোগ্য এক উচ্চাভিলাষী বাজেট। এটা স্রেফ দুর্নীতিবাজ বর্তমান সরকারের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের লক্ষ্যে প্রণীত ‘অর্থ লুটেরাদের বাজেট’। বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কট, ক্রমবর্ধমান আয়-বৈষম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে যাওয়া, বেপরোয়া অর্থপাচার, জনগণের কাঁধে রাষ্ট্রীয় ঋণের বোঝা একেবারের জন্যেও স্বীকার করা হয়নি। পরিত্রাণের উপায়ও বলা হয়নি। তেমনিভাবে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে সুশাসন ও ন্যায়বিচারের ধারণাকে।
তিনি বলেন, এই বাজেট পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩.৪ শতাংশ এবং উন্নয়ন ব্যয় ৩৬.৪ শতাংশ। বাজেটের এই অর্থের সংস্থান হবে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা আয় থেকে, আর ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা ঋনের মাধ্যমে। রাজস্ব আয়ের ৩২.৮ শতাংশ পরোক্ষ কর (ভ্যাট) এবং ৩০.৭ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর। এরই সাথে সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭.৫ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশ প্রত্যাশা করছে!
তিনি আরো বলেন, বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিয়োগসহ সামষ্টিক অর্থনীতির যেসব প্রক্ষেপণ করা হয়েছে তা অর্জনযোগ্য নয়। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেও তা কিভাবে অর্জন করা হবে তার কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা বাজেটে নেই। চলতি অর্থবছরেও ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৫ শতাংশ। সংশোধনী বাজেটে তা পরে ৬.৩ শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করা হয়। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন এবারো ৭.৫ শতাংশ টার্গেট অর্জন সম্ভব হবে না। কেন না অর্থনীতি এমনিতেই চাপের মধ্যে রয়েছে।
মহাসচিব বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ। এ চাপ মোকাবেলায় বাজেটে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন এবং খাদ্যসহ তেল, চাল, আদা, চিনি, ডিম, মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য অনেক আগেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বিবিএসের সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, গত মে মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯.৯৪ শতাংশ, যা গত ১১ বছরে সর্বোচ্চ। বাস্তবে যা ১৮-২০ শতাংশ -এর উপরে হবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। অর্থমন্ত্রী বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরাও শঙ্কিত। সারা বিশ্বে এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি। তবে আমরা খাবার তো বন্ধ করতে পারব না। একটি নমনীয় পথে এগুচ্ছি।’ তার কথাটি সঠিক নয়। বাস্তবতা হচ্ছে চীন, আমেরিকা, ভারতসহ বিশ্বের নানা দেশে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। বিশেষভাবে খাদ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কোনো পথরেখা না দিয়েই কিভাবে মূল্যস্ফীতি টার্গেট ৬ শতাংশ ঘোষণা করেছে তা বোধগম্য নয়। বাজেটে একদিকে বিনিয়োগ ২৭.৪ শতাংশ -এ উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ নেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এত বিপুল পরিমাণ অংকের ঋণ যদি সরকার নিজেই নিয়েই নেয়, তবে বেসরকারি খাত নিঃসন্দেহে ঋণপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে। তাহলে বিনিয়োগ আসবে কোথেকে? এক বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ কিভাবে ২৭.৪ শতাংশ -এ উত্তীর্ণ হবে তার কোনো নির্দেশনা দেয়নি অর্থমন্ত্রী।
দেশের অর্থনীতি মহাবিপর্যয়ে রয়েছে। ডলারের সঙ্কট প্রকট মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে গেলে প্রায় সকল ব্যাংক ফিরিয়ে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। সরকারি হিসাব মতে গত ৭ বছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে গেছে। আইএমএফ -এর হিসাব অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ দাঁড়ায় ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। বিশ্বস্ত সূত্র মতে, ইতোমধ্যে নতুন নোট ছাপিয়ে বাজারে ছাড়া হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার উপর। একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফখরুল বলেন, অর্থ পাচার অব্যাহতভাবে বাড়ছে। জিএফআই বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়। সিআইডি বলছে, শুধু হুন্ডি প্রক্রিয়ায় দেশ থেকে গড়ে বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য মিলে প্রতিবছর কমপক্ষে দেড় লাখ কোটি টাকার সমপরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে পাচার হচ্ছে। বর্তমান বাংলাদেশে চারিদিকে শুধু হাহাকার। তবে এই হাহাকার সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট ও সুবিধাভোগী নব্য ধনীদের জন্য নয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক ব্যবস্থায় নজিরবিহীন নৈরাজ্য চলছে। ব্যাংকের অতিরিক্ত ক্যাশ লিকিউডিটি কমেছে ৫৭ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে যেখানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা, এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। তবে পুনঃতফসিলকৃত ঋণ যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত বছরের প্রথম নয় মাসেই খেলাপি বেড়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। গত ৩ মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ বাড়ার প্রধান কারণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা।
তিনি আরো বলেন, এমনিতেই গত ৬ বছরে বিদেশী ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এক্ষণে চীন ও রাশিয়া থেকে নেয়া কঠিন শর্তের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ২০২৪ সন থেকেই বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সে সময় পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের বোঝা ছিল ৩২৪ মার্কিন ডলার, টাকার অংকে যা প্রায় ৩২ হাজার ৭৪০ টাকা (প্রতি ডলার ১০১ টাকা দরে)। বর্তমানে আরো বেড়েছে। আইএমএফ চাচ্ছে সরকারি ব্যাংকগুলোতে ১০ শতাংশ এর নিচে ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ৫ শতাংশ এর নিচে থাকুক খেলাপি ঋণের পরিমাণ। কিন্তু বর্তমানে কৌশলে এক ব্যাংকের আদায়যোগ্য খেলাপি ঋণ আরেক ব্যাংকে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের এই চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময়ে প্রয়োজন ছিল দল, মত ও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে একটি সাহসি ও বাস্তবসম্মত বাজেট। কিন্তু মোটাদাগে এ বাজেট আইএমএফ -এর শর্ত বাস্তবায়ন এবং বিগত অর্থবছরের বাজেটের ১৪-১৫ শতাংশ বর্ধিত অবস্থা ছাড়া কিছুই না। অথচ আইএমএফ -এর সাথে ঋণচুক্তির কথা উল্লেখই করেননি অর্থমন্ত্রী। এদিকে আইএমএফ -এর শর্তপূরণে বাড়তি আদায় করতে হবে ৪৮ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড় কমানোর বড় উদ্যোগ বাজেটে নেই।
তিনি বলেন, একদিকে মধ্যবিত্তের ওপর ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে, অন্যদিকে চার কোটি টাকা পর্যন্ত মোট সম্পদের ওপর কোনো সারচার্জ দিতে হবে না। এ পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লাখ কোটি টাকার উপরে লুট করেছে তারা। বাড়তি বিদ্যুৎ ভর্তুকি কিভাবে ব্যবহার করা হবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। আগামী অর্থবছরে বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। অনেকে বিশ্বাস করেন, বিদ্যুৎখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের মূল কারণ ক্যাপাসিটি চার্জ ও কুইক রেন্টালের নামে অর্থ লোপাটের আরো সুযোগ করে দেয়া। অথচ সারাদেশে মারাত্মক লোডশেডিং চলছেই। গ্রামে তো বিদ্যুৎ বলতে গেলে থাকেই না। রাজধানীতেই লোডশেডিংয়ে সকলের ত্রাহি অবস্থা। অথচ উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ ফেরি করে বিক্রি করতে হবে পার্লামেন্টে অহমিকা করেছে সরকার। এদিকে ডলারের অভাবে কয়লা কিনতে না পারায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ খাতের এই বিপর্যয়ের জন্য প্রধানত দায়ী এই অবৈধ সরকারের নজিরবিহীন দুর্নীতি। সরকার দেশীয় উৎস থেকে গ্যাসসহ অন্যান্য জ্বালানি আবিষ্কার ও উত্তোলনে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ো বোধগম্য কারণে আমদানি নির্ভরশীলতা বাড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আয়-বৈষম্য নিরোধের কৌশল সম্পূর্ণই অনুপস্থিত। উপরন্ত পক্ষপাতমূলক নীতিকাঠামো আয় ও সম্পদের বৈষম্য বাড়াচ্ছে। গত ১২ বছর ধরে দেশের গিনি সহগ ঊর্ধ্বমুখী যা ২০২২ সালে শূন্য দশমিক ৪৯৯ এ পৌঁছেছে।
বাংলাদেশে চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট দেশের প্রধান জাতীয় সঙ্কটে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার না থাকলে সরকারের জাবাবদিহিতা থাকে না। দেশের অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এই জাতীয় সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধমূলক নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটার একমাত্র পথ নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে।
গুলশানের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ।