শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:৪১ অপরাহ্ন

আমরা রাজপথে নেমেছি, এই সরকারের পতন ঘটিয়েই আমরা ফিরে যাব : ফখরুল

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
আপডেট : রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
আমরা রাজপথে নেমেছি, এই সরকারের পতন ঘটিয়েই আমরা ফিরে যাব : ফখরুল

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগের) একটাই উদ্দেশ্য মনমতো নির্বাচন আয়োজন। এই সরকার নির্বাচন নিয়ে আবার পাতানো খেলা খেলতে চায়। আমরা আর পাতানো খেলা খেলতে দিব না। আগামী ১৮ তারিখে আমাদের পরবর্তী আন্দোলনের ঘোষণা দিব। আমরা রাজপথে নেমেছি, এই সরকারের পতন ঘটিয়েই আমরা ফিরে যাব।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ চত্বরে রাজশাহী বিভাগের ‘তারুণ্যের রোডমার্চে’ শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের রাজশাহী বিভাগের আয়োজনে ‘তারুণ্যের এই রোডমার্চ’ অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব জনগণের। দেশে গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না, সেই প্রশ্ন এখন সবার সামনে এসেছে। জনগণ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই আবারও রাতের আঁধারে ভোট করে ক্ষমতায় যেতে চায় তারা।

তিনি বলেন, সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, সবকিছুকেই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সরকার। তারা বিচার বিভাগেও হস্তক্ষেপ করছে। দেশের বিচারব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য নতুন একটি সংগ্রাম শুরু করেছে। সেই সংগ্রামকে রোডমার্চের মধ্য দিয়ে মানুষকে জাগিয়ে তোলা এবং মানুষকে একদফার আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা। সারাদেশের মানুষ আজ বলে, আর কতদিন? আমরা দুটি জিনিস চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি আর শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এ সরকারকে মানুষ না বলে দিয়েছে।

সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে দ্রুত পদত্যাগ করেন, সংসদ বিলুপ্ত করেন, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেন। নাহলে এ দেশের মানুষ জানেন, কিভাবে ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজাতে রাস্তায় নামাতে হয়।

তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্ন। আজকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আসবে কি আসবে না তার প্রশ্ন। আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে টিকে থাকতে পারব কিনা জাতির সামনে আজ সেই প্রশ্ন। আওয়ামী লীগের এই সরকার অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনিভাবে ১৭ বছর ধরে জগদ্দর পাথরের মতো বসে আছে। আমাদের সব অর্জন তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। ১৯৭১ সালে গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম তাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা ’৯০ সালে স্বৈরাচারকে বিদায় করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলাম সেটাকেও তারা আজকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সবচেয়ে ভয়ংকর যেটি করেছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে ১০ বছর সাজা দিয়ে তাকে আটক করে রেখেছে। আজ তিনি অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছে এই সরকার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে। খালেদা জিয়াকেও মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিনাচিকিৎসায় আটকে রেখেছে। তাকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। খালেদা জিয়াকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তার কিছু হয়ে গেলে সব দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’

রাজশাহীর চারঘাটের থানার ওসির বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, এই প্রশাসনকে সরকার যে তার নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছে, তার একটি নমুনা রাজশাহীর একটি থানার ওসির বক্তব্য। ওসি নিজের মুখে বলেছেন, তাকে ভোট করার জন্য এখানে আনা হয়েছে। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, এটি তার একটি নমুনা। ২০১৮ সালের মতো আবারও রাতের আঁধারে ভোট করে ক্ষমতায় যেতে চায় এই সরকার। কিন্তু এবার আর তা হতে দেওয়া হবে না।

রাজশাহীর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার প্রমুখ।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া

%d bloggers like this:
%d bloggers like this: