নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ বাড়ানোর রোডম্যাপ করা হচ্ছে। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের দৈনন্দিন কাজ সহজ করে দেবে। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের নেপথ্যে কাজ করবে। কর্মক্ষেত্রের সর্বস্তরে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্বশীল অবদান রাখা বাঞ্ছনীয়।
সোমবার (১৩ মে) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশে কানেক্টিভিটি তৈরি হয়েছে যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিত্তি। সময়োচিত সিদ্ধান্ত দ্রুত গ্রহণ করে দেশকে দ্রুততার সাথে স্মার্ট দেশে পরিণত করতে হবে। যে সব দেশ এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। পড়াশুনা ও শিক্ষার মধ্যে থেকে উদ্ভাবন বাড়াতে হবে। উদ্ভাবন শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অবকাঠামোগত, স্বাস্থ্যগত, শিক্ষাসহ অন্যান্য বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ সমন্বিত বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়াররা যত দ্রুত প্রযুক্তিকে মানুষের কল্যাণের একটি শক্তি হিসেবে করাতে পারবে দেশ যত দ্রুত উন্নত দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার ক্রমাগত বাড়ছে। আরও বাড়ানো হচ্ছে। স্মার্ট মিটারের সাহায্যে গ্রাহকের চাহিদা অনুসারে সংশ্লিষ্ট এলাকার লোড বিতরণ ও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও স্ক্যাডার মাধ্যমে কোথায়, কেন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে তা জানা যাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসে তখন আমাদের প্রতিপাদ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ। অর্থাৎ কানেক্টিভিটি এবং কমিউনিকেশন উন্নত করা। এখনো আসছে স্মার্ট বাংলাদেশ। জ্ঞানভিত্তিক এবং প্রযুক্তি ভিত্তিক সমাজ বির্নিমাণে আমরা প্রস্তুত আছে কি না সেটি আমাদের ভাবতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রকৌশলীদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা স্মার্ট প্রিপেইড মিটার চালু করেছি। এখন কোন এলাকায় কখন কী পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে এই মিটার তার তথ্য দিচ্ছে। সেগুলো সার্ভারে জমা আছে। আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স দিয়ে খুব সহজে বের করা সম্ভব কোন এলাকায় কখন কী পরিমাণ বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। এটাই স্মার্ট পাওয়ার সিস্টেম। আমাদের এই জায়গায় এগিয়ে যেতে হবে। ব্যাঙের মতো লাফ দিতে হবে। আমরা এখনো হাটি হাটি পা পা করে এগোচ্ছি। এখানে মূল ভূমিকা শক্তি কিন্তু আপনারা (প্রকৌশলী)৷
প্রতিমন্ত্রী এসময় উপস্থিত প্রকৌশলীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যারা আছেন আমার বয়সী বা আমার আগে পাস করে এসেছেন, টেকনোলজি ফ্রেন্ডলি না, আমাদের স্টাডি এবং লার্নিং দরকার। ২০২৬ সালে আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের দেশের দিকে যাবে। ধনী হলে একটা বিরম্বনা আছে, অর্থ দিতে অনেক এজেন্সি হাত গুটিয়ে ফেলবে। এখন যত সহজে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিপির লোন পাচ্ছি তখন পাওয়া যাবে না। কম্পিটিটিভ মার্কেট চলে আসবে।
তিনি বলেন, গ্লোবাল সিনারিও চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। পুরো পৃথিবী এখন সাসটেইনিবিলিটির দিকে চিন্তা করছে। গ্রিন এনার্জির কথা চিন্তা করছে। জলবায়ুর কথা চিন্তা করছে। ফসিল ফুয়েলে এখন আর কেউ ইনভেস্ট করতে চায় না। গ্যাস, কয়লা এগুলো ফসিল ফুয়েল। ট্রানজেকশনের কথা বলা হচ্ছে। আমরা কত দ্রুত এ ট্রানজেকশনের দিকে যাবো কি যাব না সে বিষয়ে চিন্তা করতে হবে।
নসরুল হামিদ আরও বলেন, যদি আমি টেকনোলজি ইনভলভ চিন্তা করি, স্মার্ট বাংলাদেশে কী ধরনের টেকনোলজি আসবে, সেসব জায়গায় ইঞ্জিনিয়ারদের সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করার আছে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) সভাপতি মো. আবদুস সবুর, সাধারণ সম্পাদক এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জুসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।