বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন

আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চালাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০

করোনা মহামারিতে দেশের আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচলের অনুমতি প্রদানের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ।

এতে বলা হয়েছে, দেশের মানুষকে তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করার জন্য প্রতিদিন বাইরে বের হতে হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতায়াত করার জন্য একমাত্র নিরাপদ গণপরিবহন হল থ্রি-হুইলার। ৫০/৬০ কি.মি. গতির ইঞ্জিনচালিত এই থ্রি-হুইলার আরামদায়ক এবং নিরাপদ বিধায় সারা দেেেশর বেশিরভাগ চালক এবং যাত্রীদের একমাত্র জনপ্রিয় বাহন।

ছেটে শহরগুলোতে এবং গ্রামে পর্যাপ্ত এ্যাম্বুলেন্স এর অভাব থাকায় গ্রামের জনগণ কম খরচে রোগী পরিবহন করার জন্য সবসময় থ্রি-হুইলার ব্যবহার করে থাকে। তাছাড়া গ্রামের রাস্তাঘাট সরু ও আঁকাবাকা হওয়ায় হঠাৎ করে কেউ অসুস্থ্য হলে কিংবা কোন প্রসুতিকে জরুরী হাসপাতালে নেওয়ার জন্য এই থ্রি-হুইলার অটোরিক্সাকে এ্যাম্বুলেন্স হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন।

এত বলা হয়, অটোরিক্সার যাত্রী মূলত মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারের নারী, শিশু, বৃদ্ধ কিংবা পরিবারের সকল সদস্য। স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য তাদের ব্যক্তিগত গাড়ী নাই। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য জনগণের প্রথম পছন্দের বাহন হল এই থ্রি-হুইলার, যা খুব সহজে বাড়ির আঙ্গিনা থেকে সকল বয়সের যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম।

সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইনসুর আলী স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে সড়ক দূর্ঘটনার কারন দেখিয়ে এই অটোরিক্সাকে দেশের ২২টি মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ করা হল।

অথচ বিভিন্ন জরিপের তথ্য অনুযায়ী বাসের কারনে ২৭.৪৩%, মেটরসাইকেলের কারণে ২৩.৮৯%, পিকআপ ও কভার্ড ভ্যানের কারণে ২৩.৫৯%, কার-মাইক্রোবাসের কারণে ৮.২৫% এবং মাত্র ৭.৯% দূর্ঘটনা ঘটে অটোরিক্সার কারণে। উক্ত সিদ্ধান্তের কারনে দেশের প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েন এবং অনেক পরিবার অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে এতে বলা হয়, দেশর সকল অফিস, আদালত, স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার এবং সিএনজি পাম্পগুলো গড়ে উঠেছে মহাসড়ক কেন্দ্রিক। বেশিরভাগ এলাকায় হাসপাতালে যেতেও মহাসড়ক ব্যবহার করতে হয়। গ্রামেগঞ্জে বিকল্প কোন রাস্তা না থাকার কারণে মহাসড়কে স্থানীয় মানুষদের যাতায়াত অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

গ্রামের মানুষদের কাছাকাছি দূরত্ব যাতায়াত করার জন্য সব সময়ের সহজলভ্য বাহন হল অটোরিক্সা। মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে বহু এলাকার মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং বিকল্প কোন আরামদায়ক বাহন না থাকায় দৈনন্দিন যাতায়াত দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে। যেহেতু বাস সার্ভিস সর্বস্থানে সহজলভ্য নয় এবং সুনির্দিষ্ট রাস্তায় চলাচল করে, তাই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে হয়রানি বা অসহনীয় কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন।

গ্রামের মানুষ ফসলি জমি থেকে উৎপাদিত পন্য নিয়ে বাজারে যাতায়াতের এই তিন চাকার বাহন ব্যবহার করে থাকেন। যেহেতু ট্রাকে পণ্য পরিবহন করার মত প্রশস্ত রাস্তা এবং আর্থিক সামর্থ তাদের নাই। তাই তিন চাকার বাহনই গ্রামের কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনের একমাত্র ভরসা।

কমখরচে পণ্য বাজারে আনা নেওয়ার জন্য সকল ধরনের ব্যবসায়ী এবং যাত্রী সাধারণের সবচাইতে জনপ্রিয় এবং উপযুক্ত বাহন হল তিনচাকার অটোরিক্সা। এই অটোরিক্সা সেক্টরে বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠি সম্পৃক্ত তাই আপনার মমতাময়ী ও আন্তরিক সুদৃষ্টি আমাদের এই সেক্টরের বৃহৎ জনগোষ্ঠিকে বেকারত্বের হাত থেকে রক্ষা করবে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে নেতৃবৃন্দ আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, দেশের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, অফিস আদালত, হাট-বাজার তৈরি হয়েছে মহাসড়ক কেন্দ্রিক, তাই সকল আঞ্চলিক মহাসড়কগুলোতে একটা আলাদা সার্ভিস লেন তৈরি করে তিনচাকার বৈধ বাহনগুলোকে অন্তত দিনের বেলায় চলাচলের অনুমতি প্রদান করা হলে যাত্রীগণ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে।

যেহেতু আলাদা সার্ভিস লেন তৈরী করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই এই ক্ষেত্রে বর্তমানের সড়কগুলোর পার্শ্বে নির্দিষ্ট চিহ্ন দ্বারা আলাদা সার্ভিস লেন এর সীমানা নির্ধারণ করে সাময়িকভাবে এই অটোরিক্সাগুলি দিনের বেলা চলার মানবিক দিক বিবেচনা করে অনুমতি দানের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া