শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫১ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না : সালাহউদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না : সালাহউদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। সেই আওয়াজ আমরা উঠাচ্ছি। আমরা আওয়ামী লীগের এই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচার দাবি করছি।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় ঐক্য ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কে একদিকে চাবেন তারা রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হউক আবার আপনারা তাদের বিচার করবেন না, পুলিশ দিয়ে তাদের কর্মসূচি বাধা দিবেন, এতো স্ববিরোধীতা ঠিক নয়। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বৈপ্লবিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ কে প্রত্যাহার করেছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের বিতারণ করেছে।

আওয়ামী লীগ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের জন্য মাঠে নামতে দিবেন না। আমরা এটা সমর্থন করি, কিন্তু এইভাবে কতদিন রাজপথে পুলিশ দিয়ে ঠেকাবেন? আপনারা বলবেন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কে চাই না, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না কিন্তু কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন? আইনি কোন পদক্ষেপ কি এই সরকার নিচ্ছে?

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগের গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচার দাবি করছি। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হোক বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কিনা, নির্বাচন করতে পারবে কিনা।

তিনি বলেন, অধস্তন আদালতের যে সকল বিচারকরা নিশিরাতে আদালত বসিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাজা দিয়েছেন। আমি শিলং এ থাকা অবস্থায়ও আমার বিরুদ্ধে একটি মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। যাতে দেশে এসে কোনোমতে নির্বাচন করতে না পারি। হাসিনার অধীনে নির্বাচন করে কে? তারপরও নিশি রাতে আদালত বসিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাজা নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা এখন কোথায় আছে আমরা সব জানি। কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? হয়নি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের যত নেতা কর্মী হত্যা কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার হচ্ছেন। শুনেছি পাঁচশ থেকে সাড়ে পাঁচশ গ্রেপ্তার হয়েছেন। সকলে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। কারা জামিন দিচ্ছেন ওই বিচারকরাই।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে কয়দিন পুলিশ দিয়ে ঠেকাবেন। বলবেন আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে চাই না, আওয়ামী লীগ এদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। কিন্তু কি পদক্ষেপ নিয়েছেন? আইনি কোনো পদক্ষেপ কি এ সরকার নিচ্ছে? না…।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বলেছিলাম সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। সেই নিরিখে সংশ্লিষ্ট আইন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধন করার দাবি জানিয়েছিলাম। এদেশের মানুষ দাবি জানিয়েছিল।

তিনি বলেন, সংস্কার হচ্ছে ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, চলমান প্রক্রিয়া, আজীবন সংস্কার করে যেতে হবে। আজীবন আমাদের সংস্কার করে যেতে হবে সুতরাং নির্বাচনের সংস্কার দুটোকে গলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, কেউ কেউ বলতে শোনা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাদের বিচার হচ্ছে সেই বিচারে হয়তো অবজারভেশন আসবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি বিষয়ে, সেটা অত্যন্ত দুর্বল অবজারভেশন হবে। তখনো আপনাদের কে প্রশাসনিক আদেশ দিতে হবে, আইন প্রণয়ন করতে হবে সেই অবজারভেশনের নিরিখে। এখন যদি আপনারা সোচ্চার হন বিচারের জন্য, বাংলাদেশের মানুষ চায় বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির একদম নির্মূল হয়ে যাক সেই ব্যবস্থা আপনারা নিতে পারেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, নির্বাচনমুখী সংস্কারের জন্য যে সমস্ত সংস্কার স্বল্প মেয়াদে সংস্কার করা দরকার সেগুলো চিহ্নিত করুন, সকল মহলের সঙ্গে আলোচনা করুন, সেগুলোর আইনি সংস্কার করুন। আইনি সংস্কারের পর যদি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রয়োজন হয় সেটা করবেন, সেজন্য কত সময় লাগবে সেটা আমরা জানি।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান সহ আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদের সদস্যবৃন্দ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া