চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি :
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, যারা বাংলাদেশপন্থী, তাদের মধ্যে নির্বাচন হবে। বাংলাদেশ বিরোধী, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদীদের কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জে পথসভায় ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের লড়াই একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই। আওয়ামী ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই। যদি আওয়ামী লীগ ফেরত আসে তাহলে আবার ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে। শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছিলেন। আমরা শেখ মুজিব-শেখ হাসিনার শাসনামল বাংলাদেশে আর দেখতে চাই না। নতুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা আর চায় না। আমরা চাই বাংলাদেশ, বাংলাদেশপন্থিদের হাতে থাকবে। বাংলাদেশে দিল্লিপন্থিদের আর কোনো স্থান হবে না।
সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো কী সেসব বিষয় বক্তব্যে উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, আমাদের সরকারের অগ্রাধিকার রয়েছে খুনিদের বিচার করা, গুম-খুন, ধর্ষণের বিচার করা, সংস্কার করা এবং অবশ্যই বাংলাদেশপন্থী সব রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে উপহার দেওয়া, যেটি গত ১৬ বছরে সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, বিএনপি, জামায়াত নির্বিশেষে যত রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন আছে, শ্রমিক, নারী, আলেম-ওলামা আছেন—সবাই যাঁরা বাংলাদেশপন্থী সবাই বাংলাদেশে থাকবেন এবং নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাঁরা পজিটিভ একটি কম্পিটিশনের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। বাংলাদেশের জনগণকে নিয়ে বৈষম্যহীন ইনসাফমূলক একটি শাসনব্যবস্থা কায়েম করবেন।
তিনি আরো বলেন, সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে শিগগির রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ন্যূনতম সংস্কার করে গণতান্ত্রিক পটপরিবর্তনের জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।
মাহফুজ আলম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজারের অধিক ছাত্র-জনতার শাহাদতের বিনিময়ে আমরা সরকার গঠন করেছি। খুনিদের বিচার এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, সে প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার এবং একটি গণতান্ত্রিক পটপরিবর্তনের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা আমাদের সরকারের অঙ্গীকার।
তিনি বলেন, আমরা সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, নারী সংগঠন, আলেম-ওলামা সবাই মিলে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে উৎখাত করেছি। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা যে ব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে এই প্রতিষ্ঠানগুলো কবজা করে মানুষের ওপরে গণহত্যা চালিয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম সংস্কার না করে আমরা যদি নির্বাচন করি তাহলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যাবে। জনগণ কখনই বৈষম্য নিপীড়নমুক্ত হতে পারবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল, হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহীউদ্দীন ফারুক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, চাঁদপুর নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র-জনতা।