নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বেনজীর ছিলেন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার ডিফেন্ডার। তিনি বিরোধী মতকে দমনে নিষ্ঠুর নির্যাতন করেছেন।
বুধবার (০৫ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীরের দুর্নীতির খবর বের হচ্ছে তখন বেনজীর আওয়ামী লীগের কেউ নন ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ জুন) এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি, বেনজীর আমাদের দলের লোক নয়। সিনিয়রিটি মেধা নিয়ে সে আইজিপি হয়েছে। আজিজও আমাদের দলের লোক নয়। সেনাপ্রধান হয়েছে তাঁর যোগ্যতায়, তাঁর সিনিয়রিটি নিয়ে। আমরা তাদের বানাইনি।’
ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগে ওনার নাম ছিল কি না জানি না। আওয়ামী লীগকে ডিফেন্ড করার জন্য, ক্ষমতায় রাখার জন্য তিনি (বেনজীর) সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। নির্বাচনের সময় তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন যে, সেই সরকারকে ভোট দেবেন, যারা উন্নয়ন করছে, উন্নয়ন করতে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নের পক্ষে আছি।’
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে ফখরুল আরও বলেন, আমাদের লাখ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা; ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ২৮ অক্টোরের পরে দুই-তিন দিনের মধ্যে ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যখনই আমরা আন্দোলন করি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামি, তখনই তারা একেবারে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ-র্যাব আক্রমণ করে।
তিনি বলেন, বেনজীর সাহেব ছিলেন পুলিশ বাহিনী, র্যাবের প্রধান। সব পত্রিকায় যখন তার অপকীর্তি, চুরি-দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে, তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেব বলছেন, সে কি আওয়ামী লীগ করে?
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগে ওনার নাম ছিল কি না জানি না; আওয়ামী লীগকে ডিফেন্ড করার জন্য, ক্ষমতায় রাখার জন্য তিনি সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। নির্বাচনের সময় তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন যে, সেই সরকারকে ভোট দেবেন যারা উন্নয়ন করছে, উন্নয়ন করতে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নের পক্ষে আছি। তার এই কথাগুলো বলার কথা না কিন্তু কথাগুলো বলেছে। যত রকম করে পারে বিরোধী দলকে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে। বেআইনিভাবে হত্যা করেছে, জুডিশিয়াল কাস্টডিতে হত্যা করেছে, গুম-খুন করেছে এবং মিথ্যা মামলা—এই গায়েবি মামলা সেই সময় তৈরি সব।
ফখরুল বলেন, আরেকজন সাবেক সেনা প্রধান আজিজ। তাকে তারা (আওয়ামী লীগ) অনেককে ডিঙ্গিয়ে, তার দুই ভাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী জেনেও সেনা বাহিনীর চিফ করেছিল। তাদের যে কাজ, তারা সেটা করে দিয়েছিল—নির্বাচন পার করে দিয়েছিল।
‘প্রধানমন্ত্রী কয়দিন আগে বলেছেন সাদা চামড়ার লোকরা নাকি তাকে বলেছে যে, কোনো একটা দেশের এয়ারবেজ করতে দেওয়ার জন্য। সেখানে তাদের জঙ্গি বিমান নামবে। আর বাংলাদেশের একটি অংশ চট্টগ্রাম ও মিয়ানমারকে নিয়ে নতুন একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র তৈরি করার তারা চেষ্টা করছে,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে এই মুহূর্তে জনগণের কাছে এর প্রকৃত ব্যাখ্যা তুলে ধরা। কারা এটা চাইছে? কেন চাইছে? আর আপনারা কেন এতদিন পর প্রকাশ করছেন? এটা আমরা জানতে চাই। কারণ আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আপনাদের হাতে স্বাধীনতা কোনো দিনই নিরাপদ না। আপনাদের এর আগের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলেই ফেললেন, পাশের একটি দেশের ব্যাপারে যে; তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো।
তিনি আরও বলেন, তারা যে অন্যায়ভাবে আমাদের সব ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে, সে ব্যাপারে তারা (আওয়ামী লীগ) কিছু করতে পারছে না। আমাদের পানির হিস্যা দেয় না। সীমান্তে আমাদের হত্যা করা হয়, সেই সম্পর্কে একটা টু শব্দ করে না।
বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের লাখ-লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের পরে দুই-তিন দিনের মধ্যে ২৭ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যখনই আমরা আন্দোলন করি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামি, তখনই তারা একেবারে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ-র্যাব আক্রমণ করে।’
নতুন শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে ধর্মহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে ফখরুল বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য বইয়ে এমন এমন কারিকুলাম আনছে যা আমার কালচারের বিরুদ্ধে, আমার কৃষ্টির বিরুদ্ধে, আমার ধর্মের বিরুদ্ধে।