নিজস্ব প্রতিবেদক :
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া অন্য কারও অভিযান চালানোর অধিকার নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমানে দেখন যাচ্ছে দেশে পুলিশ, বিদেশি নাগরিক, সাধারণ মানুষের বাসা বাড়িতেও মব জাস্টিসের শিকার হচ্ছে, গত ৬ মাসেও এটা নিয়ন্ত্রণে আসছে না? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এটা নিয়ে দ্বিমত করবো না। যেসব জায়গায় হচ্ছে সেটা আমাদের দৃষ্টি গোচর হলেই সাথে সাথে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে। জনগণ যদি উশৃঙ্খল হয়ে যায় তাহলে সমস্যা হয়। বাহিনী দিয়েতো সব সময় কন্ট্রোল করা যায় না। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে একটি বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। যাতে এধরনের ঘটনা আর না ঘটে। এ বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে। যখন কোনো ঘটনা হচ্ছে সাথে সাথে আমাদের বাহিনী চলে যাচ্ছে, অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। ভবিষ্যতে যোন এধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের কন্ট্রোল করার জন্য মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন যেমন বড় ভূমিকা পালন করেন। এক্ষেত্রে আপনাদেরও (সাংবাদিক) একটা বড় ভূমিকা পালন করতে হবে, যাতে করে মব জাস্টিসের মতো ঘটনা না ঘটে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় তৎপর আছে এবং যে জায়গায় (মব) হচ্ছে তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা (মব জাস্টিস) না ঘটে সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
ছাত্র-জনতা চাইলেই কোথাও কোনো অভিযান চালাতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোথাও কোনো অভিযান চালতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারো কোনো অধিকার নেই।
হাইওয়েতে রাতে গাছ ফেলে ডাকাতি হচ্ছে সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ভবিষ্যতে যাতে না হয়, সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
মহাসড়কে ডাকাতির রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে রাজশাহী জোনেই ডাকাতির সংখ্যাটা একটু বেশি, টাঙ্গাইলেও একটুখানি বেশি। ডাকাতি যেন না হয় সেজন্য ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা দিয়েছি। তারা আগের চেয়ে অনেক তৎপর হচ্ছে।
সামনে ঈদ তখন এধরনের ঘটনা বেড়ে যাওয় সম্ভবনা থাকে সেজন্য কোনো ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনে ঈদ তখন যেন সড়কে চাঁদাবাজি, ছিনতাই না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশের কোনো কোনো স্থান রেড জোন, এরকম কোনো স্পট চিহ্নিত করেছেন কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, না, আমি দেখেছি ঢাকা- রাজশাহী জোন ও টাঙ্গাইল জোনে এ ঘটনাটা বেশি হচ্ছে। সেটা যেন না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যাতে তারা আগের থেকে আরও বেশি তৎপর থাকে, সে অনুযায়ী তারা অনেক তৎপর রয়েছেও।
ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবলের অনেক ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের নিজেদের কোনো থানার জায়গা নেই, ভাড়া ভবনে থাকছে তারা। পাশাপাশি যানবাহনেরও অনেক সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যেই ট্যুরিস্ট পুলিশ ভালো কাজ করে যাচ্ছে।
আমাদের দেশে ট্যুরিস্ট পুলিশ সক্রিয় হলে বিদেশি ট্যুরিস্ট আমাদের দেশে আসবে। অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখবে বলেও উল্লেখ করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।