Dhaka সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল টালিপাড়া

  • বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৩১:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
  • ১৭৭ জন দেখেছেন

বিনোদন ডেস্ক : 

গোপনে এসে বাংলাদেশে শুটিং করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পরিচালক রাহুল। বিষয়টি প্রকাশ পেতেই নাখোশ হয় টলিউডের বেশ কয়েকটি সংগঠন। কিন্তু জল যে এতদূর গড়াবে কে জানত! হ্যাঁ, ওই য়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল থেকে অচল হয়ে গেল টলিউড। বন্ধ হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের সকল সিনেমা ও সিরিয়ালের শুটিং।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের সূত্রে জানা যায়, রোববার (২৮ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে ডিরেক্টরস গিল্ড। যেখানে লেখা, অধিকাংশ পরিচালক সদস্যের আবেগ ও মতামতকে গুরুত্ব এবং মান্যতা দিয়ে সংগঠনের কার্যকরী সমিতি আজ থেকৈ যতদিন পর্যন্ত না পরিচালকদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত বাংলা ভাষার সমস্ত শুটিং ফ্লোরে সদস্যদের অনুপস্থিত থাকতে অনুরোধ করছে। বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য ভাষার ক্ষেত্রে এই অনুরোধ প্রযোজ্য নয়।

এর আগে, গেল রোববার (২৮ জুলাই) সকাল থেকেই ডিরেক্টরস গিল্ডের সদস্যরা এই বিষয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। তাদের কথা অনুযায়ী, গেল শনিবার রাহুল মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় একটি বাংলা ছবির শুটিং টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে ছিল। ফেডারেশনের আওতাভুক্ত কলাকুশলীরা সেই শুটিংয়ে উপস্থিত হননি। ফলে শুটিং করাই যায়নি। এবং সেখানে উপস্থিত পরিচালক, অভিনয়শিল্পী সকলে অপমানিত হন।

জানা গেছে, টলিউডের অগ্রজ পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনা করে স্থির হয়-কলাকুশলীরা রাহুলকে নির্দিষ্ট সিনেমার পরিচালক হিসেবে মেনে না নিলে, তার সঙ্গে শুটিং করতে রাজি না হলে পরিচালকেরা ২৯ জুলাই অর্থাৎ আজ থেকে অসহযোগিতায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন। মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান থেকে তারা নড়বেন না।

এ বিষয়ে ডিরেক্টরস গিল্ডের বিজ্ঞপ্তিতে যুক্তি দেখানো হয়, আমরা মনে করি, ফেডারেশন একটা ইন্ডাস্ট্রির একচ্ছত্র নিয়ামক সংস্থা হতে পারে না। ভুলভ্রান্তি, সমস্যা যাই হয়ে থাক, তার সমাধান না করে কাউকে জোর করে কর্মবিরতি নিতে বাধ্য করা অসাংবিধানিক। বিশেষত, ভুল বোঝাবুঝি থেকে আমাদের ডিরেক্টর্স গিল্ড রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ওপর আরোপিত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরেও যেভাবে বাকি গিল্ডের কলাকুশলীরা অসহযোগিতার পথে হেঁটেছেন তা শুধু রাহুলের জন্য নয়, আমাদের প্রত্যেক পরিচালকের জন্য অপমানজনক এবং ক্ষতিকারক। আমাদের এই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ আগামীতে যদি মাধ্যম নির্বিশেষে কোনো পরিচালক কোনো রকম সমস্যার মুখে পড়েন, তার পাশে সমস্ত পরিচালকরা দাঁড়াবেন, সেই অঙ্গীকারও আমরা করছি।

ইতিমধ্যে এই ডিরেক্টরস গিল্ডের বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে পরিচালকদের সই সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে সম্মতি জানিয়েছেন রাজ চক্রবর্তী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনীক দত্ত, অতনু ঘোষ, দেবালয় ভট্টচার্য, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।

শুরুর দিকে বাংলাদেশে শুটিংয়ের বিষয়টি বেমালুম অস্বীকার করেছিলেন রাহুল। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে নিজেদের কাজ করে যায় ফিল্ম ফেডারেশন ও ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। ৩ মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কিশমিশের নির্মাতার ওপর। সংগঠনগুলোর চাপে রাহুলকে নিজেদের ছবির পরিচালকের আসন থেকে ছেঁটে ফেলে প্রভাবশালী প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ।

অবস্থা বেগতিক দেখে সবকিছু স্বীকার করেন রাহুল। সেইসঙ্গে টেকনিশিয়ানদের বিল বাকিসহ তার ওপর আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। দেন প্রমাণও। নির্মাতার দেওয়া তথ্য প্রমাণ দেখে অপরাধ খুঁজে না পেয়ে তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞার খড়গ সরিয়ে নেয় ডিরেক্টর গিল্ড। হারানো ছবির কাজও ফিরে পান রাহুল।

তবে নিজেদেরর অবস্থানে অনড় থাকেন টেকনিশিয়ানরা। রাহুল উপস্থিতি দেখে শুটিং বন্ধ রাখেন তারা। ফলে বসে থাকতে হয় প্রসেনজিতের মতো সুপারস্টারকে। ফেডারেশনও ছিল টেকনিশিয়ানদের পক্ষে।

বিষয়গুলো গায়ে লাগে পরিচালকদের। তারা সকলে সরব হন রাহুলের পক্ষে। টেকনিশিয়ানবরা কাজে না এলে তারাও শুটিং বন্ধ রাখবভেন বলে হুমকি দেন। তবে অন্যপক্ষের অবস্থান আগের মতোই থাকলে বিজ্ঞাপ্তির মাধ্যমে কথামতো কাজ শুরু করলেন পরিচালকরা। আজ সোমবার থেকে টলিউডের সিনেমা সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ হয়ে গেল অনির্দিষ্ট কালের জন্য।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল টালিপাড়া

প্রকাশের সময় : ০৪:৩১:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

বিনোদন ডেস্ক : 

গোপনে এসে বাংলাদেশে শুটিং করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পরিচালক রাহুল। বিষয়টি প্রকাশ পেতেই নাখোশ হয় টলিউডের বেশ কয়েকটি সংগঠন। কিন্তু জল যে এতদূর গড়াবে কে জানত! হ্যাঁ, ওই য়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল থেকে অচল হয়ে গেল টলিউড। বন্ধ হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের সকল সিনেমা ও সিরিয়ালের শুটিং।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের সূত্রে জানা যায়, রোববার (২৮ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে ডিরেক্টরস গিল্ড। যেখানে লেখা, অধিকাংশ পরিচালক সদস্যের আবেগ ও মতামতকে গুরুত্ব এবং মান্যতা দিয়ে সংগঠনের কার্যকরী সমিতি আজ থেকৈ যতদিন পর্যন্ত না পরিচালকদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত বাংলা ভাষার সমস্ত শুটিং ফ্লোরে সদস্যদের অনুপস্থিত থাকতে অনুরোধ করছে। বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য ভাষার ক্ষেত্রে এই অনুরোধ প্রযোজ্য নয়।

এর আগে, গেল রোববার (২৮ জুলাই) সকাল থেকেই ডিরেক্টরস গিল্ডের সদস্যরা এই বিষয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। তাদের কথা অনুযায়ী, গেল শনিবার রাহুল মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় একটি বাংলা ছবির শুটিং টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে ছিল। ফেডারেশনের আওতাভুক্ত কলাকুশলীরা সেই শুটিংয়ে উপস্থিত হননি। ফলে শুটিং করাই যায়নি। এবং সেখানে উপস্থিত পরিচালক, অভিনয়শিল্পী সকলে অপমানিত হন।

জানা গেছে, টলিউডের অগ্রজ পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনা করে স্থির হয়-কলাকুশলীরা রাহুলকে নির্দিষ্ট সিনেমার পরিচালক হিসেবে মেনে না নিলে, তার সঙ্গে শুটিং করতে রাজি না হলে পরিচালকেরা ২৯ জুলাই অর্থাৎ আজ থেকে অসহযোগিতায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন। মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান থেকে তারা নড়বেন না।

এ বিষয়ে ডিরেক্টরস গিল্ডের বিজ্ঞপ্তিতে যুক্তি দেখানো হয়, আমরা মনে করি, ফেডারেশন একটা ইন্ডাস্ট্রির একচ্ছত্র নিয়ামক সংস্থা হতে পারে না। ভুলভ্রান্তি, সমস্যা যাই হয়ে থাক, তার সমাধান না করে কাউকে জোর করে কর্মবিরতি নিতে বাধ্য করা অসাংবিধানিক। বিশেষত, ভুল বোঝাবুঝি থেকে আমাদের ডিরেক্টর্স গিল্ড রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ওপর আরোপিত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরেও যেভাবে বাকি গিল্ডের কলাকুশলীরা অসহযোগিতার পথে হেঁটেছেন তা শুধু রাহুলের জন্য নয়, আমাদের প্রত্যেক পরিচালকের জন্য অপমানজনক এবং ক্ষতিকারক। আমাদের এই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ আগামীতে যদি মাধ্যম নির্বিশেষে কোনো পরিচালক কোনো রকম সমস্যার মুখে পড়েন, তার পাশে সমস্ত পরিচালকরা দাঁড়াবেন, সেই অঙ্গীকারও আমরা করছি।

ইতিমধ্যে এই ডিরেক্টরস গিল্ডের বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে পরিচালকদের সই সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে সম্মতি জানিয়েছেন রাজ চক্রবর্তী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনীক দত্ত, অতনু ঘোষ, দেবালয় ভট্টচার্য, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।

শুরুর দিকে বাংলাদেশে শুটিংয়ের বিষয়টি বেমালুম অস্বীকার করেছিলেন রাহুল। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে নিজেদের কাজ করে যায় ফিল্ম ফেডারেশন ও ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। ৩ মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কিশমিশের নির্মাতার ওপর। সংগঠনগুলোর চাপে রাহুলকে নিজেদের ছবির পরিচালকের আসন থেকে ছেঁটে ফেলে প্রভাবশালী প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ।

অবস্থা বেগতিক দেখে সবকিছু স্বীকার করেন রাহুল। সেইসঙ্গে টেকনিশিয়ানদের বিল বাকিসহ তার ওপর আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। দেন প্রমাণও। নির্মাতার দেওয়া তথ্য প্রমাণ দেখে অপরাধ খুঁজে না পেয়ে তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞার খড়গ সরিয়ে নেয় ডিরেক্টর গিল্ড। হারানো ছবির কাজও ফিরে পান রাহুল।

তবে নিজেদেরর অবস্থানে অনড় থাকেন টেকনিশিয়ানরা। রাহুল উপস্থিতি দেখে শুটিং বন্ধ রাখেন তারা। ফলে বসে থাকতে হয় প্রসেনজিতের মতো সুপারস্টারকে। ফেডারেশনও ছিল টেকনিশিয়ানদের পক্ষে।

বিষয়গুলো গায়ে লাগে পরিচালকদের। তারা সকলে সরব হন রাহুলের পক্ষে। টেকনিশিয়ানবরা কাজে না এলে তারাও শুটিং বন্ধ রাখবভেন বলে হুমকি দেন। তবে অন্যপক্ষের অবস্থান আগের মতোই থাকলে বিজ্ঞাপ্তির মাধ্যমে কথামতো কাজ শুরু করলেন পরিচালকরা। আজ সোমবার থেকে টলিউডের সিনেমা সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ হয়ে গেল অনির্দিষ্ট কালের জন্য।